শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১১ পূর্বাহ্ন
রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : বয়স্ক ভাতা দেশের বয়োজ্যোষ্ঠ দুষ্টু ও স্বল্প উপার্জনক্রম অথবা উপার্জনের অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা কর্মসূচীর প্রবর্তন করা হয়। বর্তমানে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বাস্তবায়নে অঙ্গিকার হিসেবে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স্ক ভাতা ভোগীর সংখ্যা দ্বিগুন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আবার যারা এসব পাওয়ার যোগ্য তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মন জোগাতে ব্যর্থ হওয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন ভাতা পাওয়া থেকে।
ভাতার পাওয়ার বয়স কিংবা বিধবা হওয়া সত্ত্বেও দুই বৃদ্ধা বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ঘাগড়া কোনা মহল্লার মৃত আব্দুর রহিম মিয়ার স্ত্রী আয়েশা বেগম (৭০) ও একই মহল্লার মৃত সামছু মিয়ার স্ত্রী লালবানু (৬৭) তারা দুইজনই জীবিকার তাগিদে এখন রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়ান। তাদের কপালে এখনো জুটেনি সরকারের নানা সুবিধা বিশেষ করে বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতার কোনো কার্ড। এদের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় মেয়ে নিয়েই তাদের সংসার চলছে।
বর্তমানে ওই এলাকার সরকারি একটি জায়গায় উপর ছোটখাটো ঘর বানিয়ে কোনো রকম দিনাতিপাত করছেন তারা। তবে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর স্বামী মারা যাওয়ায় মেয়েসহ নাতি-নাতনি এখন এদের উপরই নির্ভরশীল। বয়সের ভারে কর্মশক্তি হারানো অনেকটা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে এই দুই বৃদ্ধার। অথচ এখনো তাদের কপালে জুটেনি বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড। তারা রাজনীতি বুঝেন না কিংবা রাজনীতির মারপ্যাচে পরে ওয়ার্ড জনপ্রতিনিধিকে খুশি করার সামর্থ্যও তাদের নেই। আর কতো বয়স হলে তারা এসব কার্ড পাবেন সেই প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীরও।
তারা জানান একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলার পরও তাদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো ভাতা। খেয়ে পরে বাঁচার জন্য শুধু একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড চান তারা। অশ্রুসিক্ত নয়নে আয়েশা বেগম জানান, এই পর্যন্ত আমি কোনো সরকারি ভাবে সুযোগ-সুবিধা পাইনি। বরং কোনো বয়স্ক ও বিধবা ভাতাও না। ভিক্ষা করেই খেয়ে না খেয়ে জীবন-যাপন করছি।
এ বিষয়ে কথা হয় বানিয়াচং ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মনফর উল্লাহর সাথে। তিনি জানান, চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে মাত্র একটি বয়স্ক ভাতার নাম দেয়ার জন্য বলেছেন। তাই আমি এদেরকে না দিয়ে আমি অন্য আরেকজনকে দিয়ে দিছি। আগামীতে কোনো কিছু আসলে তাদেরকে ভাতার আওতায় আনার চেষ্টা করবো। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ারিশ উদ্দিন খানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।